দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় নড়েচড়ে বসেছে আওয়ামী লীগ। দলটির নেতাদের আশঙ্কা তফসিল ঘোষণার আগে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বিএনপি-জামায়াত। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচনের পরিবেশ ঠিক রাখতে এবং মানুষের জানমাল রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর মতো মাঠে থাকবেন নেতাকর্মীরা। বিএনপি কোথাও সহিংস হলে সেখানে পরিস্থিতি বুঝে যতটুকু কঠোর হওয়া দরকার ততটুকু কঠোর হবে ক্ষমতাসীন দল। রাজপথে বিএনপিকে একবিন্দুও ছাড় দিতে চায় না তারা।
গত শনিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর প- হয়ে যায় নয়াপল্টনে বিএনপির পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ। এর প্রতিবাদে গতকাল রবিবার হরতাল ডাকা হয়। তবে গতকাল রাজপথে হরতালের সমর্থনে বড় কোনো জমায়েত দেখা যায়নি। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এমন পরিস্থিতিতে হরতাল শেষে আগামী মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
এমন প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও বিভিন্ন দেশ। সেই কারণে দলীয় কর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অহেতুক কারও সঙ্গে বিবাদে বা সহিংসতায় না জড়িয়ে পরিস্থিতি বুঝে রুখে দেওয়ার জন্য সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
গতকাল বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে সংঘাতে যাব না। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। এ জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছি। তারা যদি আমাদের ওপর হামলা করে, তখন পরিস্থিতি যা বলবে তাই করব।’
বিএনপির আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সমর্থন নেই বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রহমান। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, অবরোধ কর্মসূচি গণবিরোধী, জনজীবনকে অশান্ত করে তোলার কর্মসূচি। এতে সাধারণ মানুষের কোনো সমর্থন থাকবে না। আমরা নির্বাচনের পথে হাঁটছি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ এ ধরনের গণবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে মানুষকে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। আমরা পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
বিএনপি গত শনিবার সমাবেশের নামে সহিংসতা চালিয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করা, তাদের নিবৃত্ত করা, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আমাদের দায়িত্ব দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা, জনগণের স্বস্তি স্থাপন করা, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমরা এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে দিতে পারি না। তাই যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা করছে বা করবে তাদের বিরুদ্ধে সরকার যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
আগামীতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাইলে বিএনপিকে বাধা দেওয়া হবে না বলে জানান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আমরা আশা করব বিএনপি চরিত্রটা বদলাবে। এবং তারা স্বাভাবিক রাজনীতি-রীতিনীতি গণতান্ত্রিক চর্চা করবে, এই সন্ত্রাসী কর্মকা- থেকে তারা সরে আসবে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, কোনো ষড়যন্ত্র, হুমকি-ধমকি নির্বাচন আটকাতে পারবে না। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সুষ্ঠু সুন্দর অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সরকার এতে সর্বোতভাবে সহায়তা করবে। সুত্র: আমাদের সময়
পাঠকের মতামত